টলিউডের যত কৌতুক শিল্পী আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় কৌতুক অভিনেতা (Comedy Actor) ‘শুভাশিস মুখোপাধ্যায়’ (Subhasish Mukhopadhyay), যাঁর নাম শুনলেই দর্শকদের মুখে হাসি ফুটে উঠত একসময়ে। মজার চরিত্রে তাঁর অনন্য অভিনয় এবং স্বতঃস্ফূর্ততা তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। কলকাতায় জন্ম নেওয়া শুভাশিস স্কটিশ চার্চ স্কুল থেকে পড়াশোনা শেষ করে শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ থেকে বি.কম ডিগ্রি অর্জন করেন। কসমেটিক সংস্থায় কাজের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করলেও শেষমেশ তিনি নিজের স্বপ্নের পেশা—অভিনয়ে চলে আসেন।
১৯৮৬ সালে ‘ছোট বকুলপুরের যাত্রী’ ছবির মাধ্যমে সিনেমায় জগতে পা রাখেন শুভাশিস। এরপর ‘গুরু শিষ্য’, ‘কত ভালোবাসা’, ‘বকুল প্রিয়া’, ‘রাজমহল’, ‘আক্রোশ’, ‘খোকাবাবু’ থেকে শুরু করে ‘টেনিদা’, ‘মহালায়া’ ও ‘ব্রম্ভা জানেন গোপন কর্মটি’—সব ক্ষেত্রেই তাঁর অভিনয় দর্শকের মনে দাগ কেটেছে। অনেকেই তাঁকে মনু মুখোপাধ্যায়ের পুত্র ভাবলেও, এটি সত্য নয় বরং তাঁর বাবা ছিলেন পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। চলচ্চিত্রে নিজের নাম করার পর টেলিভিশনের পর্দায়ও দক্ষতা দেখান। ছোটো পর্দাতেও শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের দাপট কিছু কম নয়।
‘জড়োয়ার ঝুমকো’, ‘রাখি বন্ধন’, ‘তারানাথ তান্ত্রিক’, ‘কলের বউ’ ও ‘খেলাঘর’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় দর্শকদের মন আজও গাঁথা। সিনেমা ও ধারাবাহিক—দুই ক্ষেত্রেই তিনি নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেছেন, কিন্তু প্রশ্ন ওঠে বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতির অতিরিক্ত প্রভাব, যায় জেরে টলিপাড়ার অনেকেই নেতা, মন্ত্রী হতে দৌড়াচ্ছেন। শুভাশিস বাবু এটিকে ঠিক কি নজরে দেখেন? সম্প্রতি একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেছেন, “রাজনীতি জিনিসটাই একটা বাজে জিনিস।
সে তার প্রভাব যেখানেই পড়ুক না কেন বিষয়টা অত্যন্ত দুঃখজনক। আজকাল যারা রাজনীতি করতে যাচ্ছেন, নেতা হবে বলে, তাদের মুখে একটাই কথা শুনি নাকি মানুষের সেবা করতে চান! অভিনয়টা কি মানুষের সেবা নয়?” তিনি আরো বলেন, “যে বিষয়ে আমার কোনো অভিজ্ঞতাই নেই, আমি কি কারণে সেখানে বলবো মানুষের সেবা করতে এসেছি। আমি অভিনেতা অভিনয় দিয়েই মানুষের সেবা করতে চাই। আর একটা কথা ভেবে দেখার মত যে গ্রাম বাংলায় আমি নেতা হয়ে যাচ্ছি সেখানে কিছুই কিন্তু আমি জানিনা।”
আরও পড়ুনঃ শুভকে সিঁদুর পড়াতেই স্মৃতি ফিরল আদৃতের! কান্নায় ভেঙে পড়া মোহনা কি সামলে উঠতে পারবে প্রথম প্রেমের প্রত্যাখ্যান? নাকি মেতে উঠবে আদৃতকে পাওয়ার আকাঙ্খায়?
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “মানুষের সেবা করতে গ্রামে নেতা হয়ে তো চলে যাব কিন্তু সেখানে দীর্ঘদিন ধরে যে মানুষটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেড়ে উঠছেন অন্যান্য দলের বিরোধী শক্তি হয়ে, সেই মানুষটি সামনে দাঁড়ানোর কোনো যোগ্যতাই কিন্তু আমার নেই। আর সেবা করার কথাই যখন উঠছে তখন উপরমহল থেকে যদি সেই সুযোগই না দেওয়া হয় স্বতন্ত্রভাবে কাজ করার তাহলে সেবা করবে কি করে? তাই আমি অভিনয়ই ভালো। এমন প্রস্তাব কখনো পাইনি, পেলেও নাকচ করতে সময় নেব না।”