টলিউডে (Tollywood) দীর্ঘ সময় ধরে চলমান মন্দা নতুন কিছু নয়। বড় বাজেটের ছবি কিংবা সুপরিচিত অভিনেতাদের উপস্থিতি সত্ত্বেও প্রেক্ষাগৃহে আর আগের মতো উপচে পড়া ভীড় হচ্ছে না। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে বিভিন্ন অভিনেতা এবং পরিচালক বাংলা ছবির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তবে, সাম্প্রতিক দুর্গাপুজোয় চারটি বাংলা ছবি মুক্তি পেলেও বক্স অফিসে তেমন সাফল্য দেখা যায়নি। এতে আবারও স্পষ্ট হয়েছে, শুধু জনপ্রিয়তা বা বাজেটের ওপর নির্ভর করে ছবি আর মানুষের মনে স্থান করতে পারছে না।
এই নিয়ে অভিনেতা ‘কৌশিক সেন’ (Kaushik Sen) বললেন, আজকের পরিস্থিতিতে একটি ছবিই সফল নয়, তা স্বীকার করাটাই সবচেয়ে সৎ পথ। তিনি মনে করেন, ছবি তৈরি করার সময় একমাত্র ব্যবসার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভাবা সমস্যা তৈরি করছে। ব্যবসার সাফল্য অবশ্যই কাম্য, তবে শুধুই ব্যবসার মানসিকতা নিয়েই যদি ছবি তৈরি করা হয়, তা হলে শিল্পের শিকড় দূরে সরে যাচ্ছে। দর্শক এখন ছবি দেখার সময় শুধুই কটা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেল, কে কী প্রচার করল বা সামাজিক মাধ্যমে কতটা আলোচনা হলো— এই বিষয়গুলো নিয়েই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন।
কৌশিকের মতে, সাফল্য উদযাপন করার প্রচেষ্টা আজকাল অতিরিক্ত হয়ে গেছে। জোর করে পার্টি আয়োজন করে বোঝানো হয় ছবিটি কতটা সফল। কিন্তু বাস্তবে তা শিল্পের উন্নতিতে খুব একটা সাহায্য করছে না। অভিনেতা-অভিনেত্রীদেরও এখন বাণিজ্যিক বিষয়ে সরাসরি যুক্ত হতে দেখা যায়, যা তিনি স্বাস্থ্যকর মনে করছেন না। তার দাবি, বিষয়বস্তুর গুরুত্ব যেন পিছিয়ে না পড়ে, নাহলে চলচ্চিত্র শুধুই ব্যবসা হিসেবে পরিণত হবে। তাঁর নিজের কথায়, “এই পরিস্থিতিটা খুব ভয়ের।
জোর করে ‘সাকসেস পার্টি’ দেখিয়ে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, কতটা সফল! অদ্ভুত লাগে, এইসবে এখন অভিনেতা-অভিনেত্রীরাও যোগ দিচ্ছেন। তারাও বাণিজ্য করতে নেমে পড়ছেন, যেটা অস্বাস্থ্যকর। শুধুই ব্যবসা নিয়ে কথা হবে কেন, আলু পটলের ব্যবসা হোক এবার!” তিনি বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের উদাহরণ টেনে বলছেন, যেখানে প্রচেষ্টা এবং সময় দিয়ে কাজ করলে পরিশ্রম সত্ত্বেও ছবি খারাপ হতে পারে, কিন্তু সেই ধাপ পার হয়ে নতুন পথ তৈরি হয়। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ক্ষেত্রেও সমানভাবে নতুন উদ্যোগ এবং মনোযোগ প্রয়োজন।
আরও পড়ুনঃ ‘যদি তোমার বাপের পয়সা থাকে তাহলে এই ভিডিও আপনার জন্য নয়!’ ‘একেই অন্য অভিনেত্রীর নকল করছেন তার উপরে মুখের ভাষা জ’ঘন্য!’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ক’টাক্ষের মুখে মধুবনী
চটজলদি কাজের মান নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হলেও ধৈর্য ও চেষ্টার মাধ্যমে শিল্প পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব। আরও বলেন, বাঙালির সংস্কৃতির প্রতিফলন আজকের ছবিগুলিতে স্পষ্ট নয়। লোকসংস্কৃতি দেখানোতেই সীমাবদ্ধ না থেকে সামাজিক গল্প কিংবা সাধারণ মানুষকেই পর্দায় তুলে ধরে সত্যিকারের চেতনা প্রকাশ করা সম্ভব। নিজের সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘স্বার্থপর’ ছবির প্রসঙ্গে টেনে তিনি বলেন, এই ছবি ব্যতিক্রম— যেখানে পরিচালক কোনও নাটকীয়তা যোগ করেননি, বাস্তবতার ছোঁয়া দিয়েই গল্প তুলে ধরেছেন।






