নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের পরিচিত মুখ ‘বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়’ (Basanti Chattopadhyay)। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেনের মতো তারকাদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। তবে বর্তমানে ৮৫ বছর বয়সে পৌঁছে জীবনের এক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী (Veteran Actress)। শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও সংসার চালানোর জন্য তাঁকে অভিনয় চালিয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক দুর্ঘটনার কারণে তাঁর কাজও আপাতত বন্ধ।
গীতা এলএলবি (Geeta L.L.B) ধারাবাহিকে ব্রজবালা দেবীর চরিত্রে দেখা যাচ্ছে তাঁকে। কিন্তু সম্প্রতি শ্যুটিংয়ে নিয়মিত থাকতে পারছেন না তিনি। শারীরিক সমস্যার জন্য মাঝেমধ্যেই বিরতি নিতে হয় তাঁকে। ফিজিওথেরাপি করানোর সময় আচমকা তাঁর পা বেকায়দায় মুচকে যায়, গুরুতর চোট পান তিনি। ব্যথার কারণে এখন হাঁটতেও সমস্যা হচ্ছে, ফলে শ্যুটিং বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু কাজ ছাড়া রোজগারও বন্ধ, তাই সংসার চালানো ও চিকিৎসার খরচ কীভাবে সামলাচ্ছেন তিনি?
এই পরিস্থিতিতে বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তাঁর কোনও নির্দিষ্ট আর্থিক সহায়তা নেই। নিজের জমানো টাকা দিয়েই সংসারের খরচ চালাচ্ছেন তিনি, তবে কতদিন এইভাবে চলতে পারবেন, তা নিয়েই উদ্বিগ্ন তিনি। চিকিৎসার জন্যও সেই জমানো অর্থই ব্যয় হচ্ছে। তাঁর মেয়ে বিবাহিত, অভিনেত্রীর মেয়ে থাকলেও তিনি নিজের সংসার সামলাতেই ব্যস্ত, তাই মা’কে সেভাবে সাহায্য করতে পারেন না। অভিনেত্রীর কণ্ঠে অভিমান স্পষ্ট হলেও বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে আপস করেই চলতে হচ্ছে তাঁকে।
তবে এই কঠিন সময়ে তিনি একা নন। সহকর্মীদের কাছ থেকে বেশ কিছু সাহায্য পেয়েছেন তিনি। ‘গীতা এলএলবি’র প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তী এগিয়ে এসে তাঁকে ৯০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। অন্যদিকে, অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহায্যের আবেদন জানান, যার ফলে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সহশিল্পীরাও এগিয়ে আসেন। এই সাহায্যের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ টাকা।
আরও পড়ুনঃ বক্স অফিসে দেবের সেঞ্চুরি! দুর্নিবার গতিতে ১০০ দিন পার করল খাদান! আবার কবে আসবে এমন বাণিজ্য সফল ছবি?”
একদিকে অসুস্থতা, অন্যদিকে জীবনযুদ্ধ—দুয়ের সঙ্গেই সমানতালে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বাসন্তী চট্টোপাধ্যায়। বাসন্তী চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি যত দ্রুত সম্ভব সুস্থ হয়ে কাজে ফিরতে চান। কারণ অভিনয়ই তাঁর জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। যতই অসুস্থতা আসুক, বয়স হোক, কাজের প্রতি তাঁর ভালোবাসা এখনও অটুট। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও তাই তিনি নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।