স্টার জলসার (star jalsha ) জনপ্রিয় ধারাবাহিক দুর্গাতে (Durga ) নাম চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সন্দীপ্তা সেন (Sandipta sen)। জি বাংলার (Zee Bangla ) জনপ্রিয় ধারাবাহিক করুণাময়ী রানী রাসমণিতে তিনিই হয়েছিলেন মা সারদামনি। এছাড়া টাপুরটুপুর থেকে শুরু করে তুমি আসবে বলে(Tumi asbe bole), প্রতিদানের মত ধারাবাহিকের তার অভিনয় রীতিমতো মুগ্ধ করেছে আট থেকে আশির দর্শককে। ছোট পর্দার পাশাপাশি বড় পর্দা (movie) ও ওয়েব সিরিজে (webseries) ও কাজ করেছেন তিনি সমান তালে। জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী অভিনয়ের পাশাপাশি একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী, এছাড়াও তিনি একজন মনোবিদ।
রূপোলি পর্দার ক্ষেত্রে সচরাচর যেটা হয় সেটা হল মানুষ যখন এই জগতে আসতে চান, তখন তাকে অনেক বেশি লড়াই করতে হয় কিন্তু সন্দীপ্তার ক্ষেত্রে একদমই সেটা হয়নি। সন্দীপ্তা বলেন যে, লাকিলি তার সাথে এরকম কিছুই হয়নি। তার কাছে প্রথম প্রজেক্ট দুর্গার জন্য অফার আসে, তাকে অডিশন দিতে বলা হয় এবং তিনি খুব সাধারণভাবে অডিশনটা দেন এবং সিলেক্ট হয়ে যান। তাই কাজের শুরুতে তাকে স্ট্রাগেল কী সেটা বুঝতে হয়নি।
কিন্তু এরপর তিনি বুঝতে পারছিলেন না তিনি কী করবেন? কারণ তিনি কোনদিন অভিনেত্রী হতে চাননি তিনি সাইকোলজি নিয়ে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছিলেন এবং ভেবেছিলেন পরবর্তীকালে তিনি কোনও বড় কোম্পানিতে এইচ আর হিসেবে জয়েন করবেন। সেখানে তার কী করা উচিত সেটা জানবার জন্য তিনি তার বাবা, মা এবং জেঠুর সাথে পরামর্শ করেন কিন্তু তারা তাকে বলে তুমি কী চাও সেটা গুরুত্বপূর্ণ। সন্দীপ্তা মনে করেন তার পরিবার কখনও তার ওপর কোন কিছু চাপিয়ে দেয়নি যে কারণে আজ তিনি এই জায়গায় এসে পৌঁছেছেন।
এমনকি কখনও কখনও অভিনেত্রী তার পরিবারের লোকের ওপর রেগে যেতেন যে কেন পরিবারের লোক তাকে বলছে না তার কী করা উচিত কিন্তু আজ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে তিনি বুঝতে পারেন তাকে এই স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছিল বলে এই ডিসিশন মেকিং পাওয়ার তার মধ্যে তৈরি হয়েছিল এবং তিনি মনে করেন বর্তমান প্রজন্মেও বাবা-মায়েদের সন্তানের প্রতি এমনটাই করা উচিত।
সন্দীপ্তা বলেন তার লাইফের স্ট্রাগেলটা এর পর শুরু হল যখন তিনি দুর্গার শুটিং করতে গেলেন এবং টানা পাঁচ দিন বাইশ ঘন্টা করে শুটিং করেছেন তিনি। সেইসময় তার বাবা মায়ের সাথে গুড মর্নিং এবং গুডনাইট বলা ছাড়া আর কোন যোগাযোগই থাকত না, তখন তার ভীষণভাবে স্ট্রেসফুলি লাইফ যেতে থাকে কিন্তু তিনি ম্যানেজমেন্ট হাউস, প্রোডাকশন হাউসের সাথে কথা বলে সেই প্রবলেমটা সল্ভ করেন।
এরপর দুর্গা শুরু করার এক বছর পর রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ তিনি রেগুলারে মাস্টার্সে ভর্তি হন সাইকোলজি নিয়ে এবং তিনি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়েছিলেন। অনেকেই জিজ্ঞেস করেন যে, দুর্গা ধারাবাহিক করতে করতে এটা কীভাবে সম্ভব করলেন তিনি? কিন্তু সন্দীপ্তা মনে করেন যদি ইচ্ছা থাকে তো অবশ্যই উপায় হয়। সন্দীপ্ত মনে করেন লাইফে যদি কখনো কম্পেয়ার করেছ,তাহলে গল্প শেষ তুমি নিজে কী চাইছো সেটা বেশি ইম্পোর্টেন্ট। নিজেকে প্রশ্ন করো তুমি কী চাও।
একই সাথে সন্দীপ্তা মনে করেন যে, কেউ যদি আসতে চায় তাহলে মাথায় রাখতে হবে যে অভিনয়ে আসাটা যেমন ডিফিকাল্ট, তেমনি সাকসেস হ্যান্ডেল করা তার থেকেও বেশি ডিফিকাল্ট। একটা ভালো কাজ বা প্রজেক্ট পেয়ে যাওয়ার পর সেই সাকসেসটাকে ধরে রাখতে হয় এবং পরবর্তীতে কী কাজ বেছে নিচ্ছো সেটার উপর অনেক কিছু নির্ভর করে সেই কারণে একটা ভালো রোল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।
আরও পড়ুন: সেরা পাঁচে নেই জগদ্ধাত্রী,শুভ বিবাহ! খেল দেখালো উড়ান! বঙ্গ সেরা হল কোন ধারাবাহিক?
উল্লেখ্য কোভিড পিরিয়ডে অভিনেত্রী সবার মানসিক স্বাস্থ্যের দেখভাল করার জন্য সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘Share with Sandipta’ বলে একটি অনলাইন কাউন্সেলিং সেশন করান। নিজের জীবনের ওঠা পড়া নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন একসময় অঙ্কতে ১০০ তে ১৩ পেয়েছিলেন তিনি, কিন্তু তার জীবনের সেই ব্যর্থতা তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। জীবনে নিজের ওপর কনফিডেন্ট রাখার দরকার আছে, একই সাথে তিনি মনে করেন শরীরের সাথে সাথে মনেরও ডিটক্স করার প্রয়োজন আছে, কম্পিউটারের মতো আমাদের মনেরও একটি রিফ্রেস বাটন দরকার তাই যদি মনের কোন অসুবিধা হয় আমাদের সব সময় মনোবিদের কাছে গিয়ে মনের সমস্যার কথা জানানো উচিত।