ধারাবাহিকে তাঁর চেহারায় ভয়! চোখে চোখ রাখতেও ভয় পায় অনেকেই। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে ‘কুসুম’ ধারাবাহিকের দাপুটে শাশুড়ি ইন্দ্রানী গাঙ্গুলী চরিত্রে অভিনয় করা অঞ্জনা বসুকে নিয়ে। টেলিভিশনের পর্দায় তাঁর স্ট্রিক্ট এবং মেজাজ দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন— বাস্তবেও কি তিনি এমনই? সম্প্রতি এক ইন্টারভিউতে নিজের জীবনদর্শন এবং ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে বিস্ফোরক উক্তি করলেন অভিনেত্রী। আড্ডায় মজে একের পর এক ব্যক্তিগত কথা ফাঁস করলেন তিনি, জানালেন নিজের জীবনের বেশ কিছু কঠোর সিদ্ধান্ত এবং সেই সঙ্গে সামাজিক মূল্যবোধ নিয়েও নিজের অবস্থান।
অনেকেই মনে করেন, অঞ্জনা বসুর মধ্যে এক ধরনের ‘অরা’ বা বলয়ের মতো কিছু রয়েছে, যেটা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে। এই ভাবনা নিয়ে মুখ খুলে তিনি বলেন, “আমি নিজেই শুরুতে সেই বলয়টা তৈরি করেছিলাম, যাতে কেউ যেন খারাপ ব্যবহার করতে না পারে। খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছি আমি। ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ ছিল না, তাই একটু ভয়ও পেতাম। তাই নিজেকে একটু গুটিয়ে রাখতাম। কেউ যেন সীমা লঙ্ঘন না করে।” ব্যক্তিজীবনে তিনি কতটা স্ট্রিক্ট— সেটাও অকপটে স্বীকার করেন। বলেন, “ভুল হলে ক্ষমা আছে, কিন্তু অন্যায়ের কোনও ক্ষমা নেই।”
অভিনেত্রী জানান, আজকের প্রজন্মের মধ্যে ভয় বলে কিছু নেই। আর সেখানেই সমস্যার শিকড়। “ভয় যদি না থাকে, তাহলে সম্মানও থাকবে না। আমরা একসময় শুধু কারও তাকানোর মধ্যেই ভয় পেতাম। এখন সেটা নেই বলেই এত অপরাধ বাড়ছে।” নিজের ছাত্রজীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে বর্তমান সমাজের চিত্র— সবকিছু মিলিয়ে তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, স্ট্রিক্ট হওয়াটা কতটা দরকার একজন মানুষ হিসেবে।
নিজের সন্তানকেও ঠিক সেইভাবেই বড় করেছেন তিনি। জানান, “রাত ন’টার পর বাড়ি ঢোকার অনুমতি ছিল না। একবার পুজোয় ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যেতে চাইলে বলেছিলাম— ছটার মধ্যে বাড়ি ফিরতে হবে, ফিরেছিলও।” এমনকি ছেলে এখনও প্রতিদিন ভিডিও কল করে ঘুমোয়। অঞ্জনার কথায়, এটা শুধু ‘মা’ হিসেবে নয়, একজন ‘শিক্ষক’ বা ‘নিয়মকর্তা’ হিসেবে তার ভূমিকারই ফল।
আরও পড়ুনঃ চন্দ্রকে কাঁপিয়ে দিয়ে সোহিনীর খোলা হু’মকি! চন্দ্রর মুখোশ এবার খুলে গেল! চন্দ্রকে শিক্ষা দিতে বদ্ধপরিকর কমলিনী-সোহিনী! বন্ধুত্বের নাম করে বাড়ির মালিকানা দাবি চন্দ্রর! ফাঁদে পড়ছে কি কমলিনী?
শেষে উঠে আসে সহ-অভিনেতা বা জুনিয়রদের প্রতি তাঁর মনোভাবের প্রসঙ্গ। এক সময় টিপস দিতেন, কিন্তু এখন তা বন্ধ করেছেন। বলেন, “যারা নিজেরা সব কিছু জানে বলে মনে করে, তাদের আমি কিছু বলি না। কেউ যদি নিজে থেকে জানতে চায়, তখন বলি। উপযাজক হয়ে কিছু বলা আমি বন্ধ করেছি।” পাশাপাশি স্মরণ করলেন নিজের পুরনো দিনের অভিজ্ঞতা— সিনিয়রদের সম্মান জানানো আর তাঁদের থেকে শেখার সেই মানসিকতা কীভাবে এখন হারিয়ে যাচ্ছে।