ছোটপর্দার অভিনেত্রী মানসী সেনগুপ্তের (Manosi Sengupta) জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে চলতি বছর মার্চে, দ্বিতীয়বার মা হয়েছেন তিনি। আগেই একটি কন্যাসন্তান ছিল, এবার পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। তবে মাতৃত্বের দায়িত্ব সামলে আবারও পেশায় ফিরেছেন ইতিমধ্যেই। বর্তমানে তাঁকে দেখা যাচ্ছে ‘রাজরাজেশ্বরী রাণী ভবানী’ ধারাবাহিকে। অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত ভ্লগও করেন মানসী, যেখানে পরিবার ও সন্তানদের নানা মধুর মুহূর্ত তুলে ধরেন তিনি। ছেলের জন্মের ছ’মাস পার হতেই দেওয়া হয়েছে অন্নপ্রাশন। আর সেখানেই তৈরি হলো বিতর্ক!
অন্নপ্রাশনের আয়োজন মানসী করেছেন একেবারে বিয়ের মতোই জাঁকজমক করে। ছেলেকে সোনার চেন, বালা, আংটি দিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন। খাবারের তালিকায়ও ছিল বাঙালি পদ থেকে শুরু করে ফিউশন পর্যন্ত। দুপুরের এই অনুষ্ঠানে ছিল রেশমি কাবাব, ইলিশ ভাপা, মাটন, চিকেন, পোলাও, নানসহ আরও অনেক আয়োজন। তবে এই উচ্ছ্বাস আর উৎসবমুখর পরিবেশের মাঝেই চোখে পড়ল এক বড় অনুপস্থিতি— সন্তানের বাবা কোথাও নেই! ছবি, ভিডিও, এমনকি খাওয়ানোর মুহূর্তেও দেখা গেল না তাঁকে।
এই প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো, একসময় মানসীর স্বামীকে ঘিরে বিতর্ক চরমে উঠেছিল। নিজেই জানিয়েছিলেন যে স্বামীর থেকে আলাদা থাকছেন। খুব তাড়াতাড়ি বিচ্ছেদের পথে হাঁটবেন। তবে, এর কিছুদিন পর জানান যে মেয়ের জন্য আলাদা হচ্ছেন না। এবার দ্বিতীয় সন্তানের পরিকল্পনা করছেন সম্পর্ক বাঁচাতে। সন্তানের বিশেষ দিনে বাবার অনুপস্থিতি আবারও সেই সমালোচনার আগুনে ঘি ঢেলে দিল। সমাজ মাধ্যমে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, “এত বড় অনুষ্ঠানে বাবা কোথায়?”
কেউ কেউ বলেছেন, “পুরো অনুষ্ঠানটাতে বাচ্চার মা-ই সব, কেন বাড়িতে বাবা, দাদা, মামা, দাদু কেউ নেই?” সমালোচকরা কটাক্ষ করে বলছেন, মানসী নাকি স্বামীকে কেবল শো-পিস বানিয়ে রেখেছেন! আবার অনেকে মনে করছেন, মা হয়ে তিনি প্রচলিত রীতিনীতির বাইরে চলে গিয়েছেন, যেখানে আজও গ্রামবাংলায় ছেলের অন্নপ্রাশন থেকে বিয়ে মাকে দেখতে নেই। বিশেষ করে বাচ্চাকে নিজে হাতে খাওয়াতে দেখা যায় তাঁকে, এই নিয়েই চলছে জোর সমালোচনা।
তবে বিতর্কের জায়গাটা আরও বাড়ল অন্য একটি ঘটনায়। অন্নপ্রাশনের নিয়ম অনুযায়ী প্রথমে বাচ্চার দাদু পায়েস খাওয়াতে গেলেও, মানসী হাত ঠেলে তা আটকে দেন। যুক্তি ছিল, তিনি ছেলের বয়স দুই বছর না হলে চিনি দেবেন না। সমালোচকেরা বলছেন, “এত আয়োজনের মানেটা কী, যদি রীতি অনুযায়ী শিশুকে পরমান্নের স্বাদই দেওয়া না যায়!” অনেকে মনে করছেন, এই বাড়াবাড়ি না করলেও চলত। কারও মতে, গুরুজনদের হাত ঠেলে দেওয়া মানে পরিবারের শিক্ষা দিকে প্রশ্ন তোলার সুযোগ করে দেওয়া।
আরও পড়ুনঃ “উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া গয়নার লোভেই বিয়ে…শ্বশুর-শাশুড়ির মাথা নাকি চিবিয়ে খাব!”— প্রকাশ্যেই ব্যক্তিগত জীবনের গোপন কথা ফাঁস করলেন সুদীপা!
সব মিলিয়ে মানসীর ছেলের অন্নপ্রাশন হয়ে উঠেছে যেমন চমকপ্রদ, তেমনই বিতর্কিত। একদিকে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন, অন্যদিকে স্বামীর অনুপস্থিতি ও নিয়ম ভাঙা আচরণ নিয়ে ক্ষোভ। মা হিসেবে নিজের সিদ্ধান্তে দৃঢ় থেকেছেন মানসী, তবে দর্শক-সমালোচকরা বিষয়টিকে সাদরে নেয়নি। এখন প্রশ্ন একটাই— অভিনয়ের পাশাপাশি মাতৃত্বের দায়িত্ব সামলাতে গিয়ে তিনি কি আরও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবেন, নাকি এই সমালোচনা ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাবে?
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।