পশ্চিমবঙ্গ তথা বর্তমান সমাজে ট্রান্সজেন্ডার বা রূপান্তরকামী পরিচয় এখনও বড় চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে। এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে আজ সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন ডঃ মানবী বন্দ্যোপাধ্যায়। জীবনের শুরু থেকেই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে তার পরিচয় অন্যদের থেকে ভিন্ন। সেসব বাধা, দ্বিধা ও ভয়কে পেছনে ফেলে মানবী আজ সমাজের এক দৃঢ় ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হিসেবে পরিচিত।
মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় কেবল একজন রূপান্তরকামী নন, তিনি ভারতের প্রথম রূপান্তরকামী কলেজ অধ্যক্ষ এবং ট্রান্সজেন্ডার ওয়েলফেয়ার বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন। তার জীবন কেবল পদে নয়, বরং সংগ্রামের মাধ্যমে সমাজে রূপান্তর ও স্বীকৃতির জন্য এক অনুপ্রেরণা। ‘নগরকীর্তন’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, এখানে অভিনয় করা নয়, বরং জীবনের অভিজ্ঞতাকে দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়েছে।
নিজের পরিচয় প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মানবী সামাজিক সচেতনতার জন্যও কাজ করেছেন। ‘মহা-মানব’ নামে একটি পত্রিকা তিনি চালু করেছিলেন, যা হিজড়া সম্প্রদায়ের প্রতি সমাজের অবমাননাকর আচরণের প্রতিবাদ হিসেবে আলোড়ন তৈরি করেছিল। এই প্রচেষ্টা দেখিয়েছে যে মানবী কেবল নিজের জন্য নয়, পুরো সম্প্রদায়ের জন্য লড়াই করেছেন।
আরও পড়ুনঃ ‘আমাকে টার্গেট করুন, সব সহ্য করেছি… সন্তানদের মে’রে ফেলার হু’মকিটা মা হিসেবে সহ্য করা অসম্ভব!’ ‘মাঠে আমি ছিলাম না, তবু আমাকে অপরাধী বানানো হলো’ মেসি বিতর্কে অবশেষে মুখ খুললেন শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়! জানালেন আসলে কী ঘটেছিল?
সম্প্রতি এক ইন্টারভিউতে মানবী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তার জীবনের যেকোনো সাফল্যের মূল কারণ হলো বাবা-মার অদম্য সমর্থন। তিনি বললেন, বাবা-মা ভালোবাসার মাধ্যমে তাকে শক্তি দিয়েছেন। পরিবারে অন্যান্য সদস্যরা তাকে দূরে ঠেলার চেষ্টা করলেও বাবা-মার সাহস ও বিশ্বাসই তাকে আজ সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
মানবী আরও প্রকাশ করেছেন, বর্তমান সমাজে ট্রান্সজেন্ডার মানেই মানুষ অনেক সময় ধরে নেয় ভ্রান্ত ধারণা—যে তারা হয়তো দেহ ব্যবসায় জড়িত। অথচ বাস্তবে ট্রান্সজেন্ডাররা সমাজের জন্য অসংখ্য সেবামূলক কাজ করে থাকে, তবুও তাদের যথাযথ সম্মান নেই। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা ভালোবাসি তারা ব্যবহার করে”।






