স্টার জলসার নতুন ধারাবাহিক চিরসখা দর্শকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। অনেকের মতে, ধারাবাহিকের একমাত্র উজ্জ্বল দিক অপরাজিতা ঘোষ দাসের অভিনয়। তিনি তার চরিত্রে অসাধারণ দক্ষতা দেখাচ্ছেন, যা দুর্বল গল্পের মাঝেও কিছুটা আশার আলো জাগায়। তবে সামগ্রিকভাবে গল্পের বিন্যাস বেশ অগোছালো, যেখানে চরিত্রগুলোর রসায়নও সঠিকভাবে জমছে না। বিশেষ করে, নায়ক সুদীপের সঙ্গে অপরাজিতার রসায়ন দর্শকদের মন জয় করতে পারছে না।
ধারাবাহিকটির গল্প নিয়ে অনেকেই হতাশ। বেশিরভাগ দর্শক শ্রীময়ী-র সঙ্গে তুলনা করলেও, এখানে বড় পার্থক্য হলো গল্পের মূল কাঠামো। শ্রীময়ী শেষের দিকে রোহিত সেনের গল্পরেখায় কিছুটা ভারসাম্য হারালেও, চিরসখা যেন শুরু থেকেই তার ছায়া অনুসরণ করছে। যদি ঋষি কৌশিকের মতো অভিজ্ঞ অভিনেতাকে এই ধারাবাহিকে নেওয়া হতো, তবে গল্পের গ্রহণযোগ্যতা অনেকটাই বাড়ত।অপরাজিতার বিপরীতে তার মতো পরিপক্ক অভিনেতা থাকলে ধারাবাহিকটি আরও প্রাণবন্ত হতো।
অন্যান্য চরিত্রগুলোর মধ্যে ঐশী মোটামুটি মানানসই হলেও, ভিভান ও রাজার চরিত্রায়ন যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের চরিত্র যদি নায়িকার দেওর হতো, তাহলে গল্পের যুক্তি আরও সুসংহত থাকত। কিন্তু নির্মাতারা সম্পর্কের সমীকরণগুলোকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে জটিল করে তুলেছেন। এতে গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা কমে যাচ্ছে, যা দর্শকদের মাঝে হতাশা তৈরি করছে।
আরও পড়ুনঃ ফের প্রেমে পড়তে চান শ্রাবন্তী! প্রেম ছাড়া কী জীবন চলে! জিতু দারুন হ্যান্ডসাম! অকপট অভিনেত্রী
লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখায় একটি সাধারণ প্রবণতা দেখা যায়—চরিত্রের বয়স ও অভিনেতার বাস্তব বয়সের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখা হয় না। উদাহরণ হিসেবে, ৪০ বছর বয়সী একজন অভিনেত্রীকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধার চরিত্রে দেখা যাচ্ছে, আবার ৪০ বছর বয়সী একজন পুরুষকে ২৫ বছরের যুবকের চরিত্রে কাস্ট করা হচ্ছে। এই ধরনের অস্বাভাবিক বয়সবৈষম্য দর্শকদের বিচলিত করছে এবং গল্পের বাস্তবতা আরও দুর্বল করে তুলছে।
সব মিলিয়ে, চিরসখা এক ক্লিশে-ভরা ধারাবাহিক, যা শুধুমাত্র শক্তিশালী অভিনয়ের ওপর নির্ভর করে এগোচ্ছে। যদি গল্পের বিশ্বাসযোগ্যতা ও চরিত্রের সম্পর্কের বুনন আরও বাস্তবসম্মত করা যেত, তবে ধারাবাহিকটি দর্শকদের আরও বেশি আকর্ষিত করতে পারত। বর্তমানে, দুর্বল গল্প ও ভুল চরিত্রায়নের কারণে এটি আশানুরূপ প্রভাব ফেলতে পারছে না।