শাস্তি পেল সঞ্জয়! ‘বাকি অপরাধীরা কি পা দোলাচ্ছে?’ ক্ষোভে ফেটে পড়লেন অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত

২০২৪ সালের কলকাতায় (kolkata) ঘটে গেছিল একটি চরম ভয়াবহ ঘটনা, যা পুরো শহরকে শোকস্তব্ধ করে দিয়েছিল। ঘটনাটি ছিল আরজি কর (RG KAR)কাণ্ড, যেখানে এক চিকিৎসক নিহত হন। এই ঘটনার পর শহরের সাধারণ জনগণ, এবং বিশেষ করে চিকিৎসক সমাজ, চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে। তৎকালীন পরিস্থিতি এমন ছিল যে, এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিরা শাস্তি পাওয়ার দাবি তুলে জনসমক্ষে প্রতিবাদ করতে নেমে আসেন সবাই। সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ, এমনকি বিনোদন জগতের তারকারাও এই ঘটনার প্রতিবাদে আওয়াজ তুলেছিলেন।

আরজি কর কাণ্ডে আক্রান্ত ডাক্তারের মৃত্যুর পর, শুধু সাধারণ মানুষই নয়, কলকাতার বিনোদন জগতের তারকারাও চুপ ছিলেন না। তাঁরা এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সড়কে নেমে এসেছিলেন, তাঁদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে, অপরাধীকে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক। অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত (Debolina Dutta) সহ আরও বেশ কয়েকজন তারকা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে একযোগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়াজ তুলেছিলেন, এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন শুরু করেছিলেন। তবে, এও ছিল বাস্তব যে, শাস্তির জন্য সরকার এবং প্রশাসনের দিক থেকে দীর্ঘ সময়ের অনীহা ছিল।

আজ, ৫ মাস ১১ দিন পর, অবশেষে সঞ্জয় রায়কে শাস্তি দেওয়া হলো। কলকাতাবাসী এই ঘটনার জন্য যে ফাঁসি আশা করেছিলেন, তা শেষ পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি, তবে তাকে আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। অপরাধী সঞ্জয় রায়কে যে শাস্তি দেওয়া হয়েছে, তা দেখে অনেকেই প্রশংসা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু, এই ঘটনাটি যেমন তারকা জগতের সঙ্গে জড়িত, তেমনি এতে গা সওয়া হয়ে ওঠা বাকি অপরাধীদের নিয়েও বিভিন্ন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কলকাতা বাসীর মনে এক বড় প্রশ্ন ওঠে—বাকি অপরাধীরা কি শুধু বাড়িতে বসে পা দোলাচ্ছে?

অভিনেত্রী দেবলীনা দত্ত, যিনি এই ঘটনায় প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর তুলে ছিলেন, তার বক্তব্য ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। তিনি জানান, “এটা শুধু একজন মানুষের মৃত্যু নয়, এটা আমাদের সামাজিক মূল্যবোধেরও প্রশ্ন!” এর আগেও দেবলীনা প্রতিবাদী রূপে সামিল হয়েছেন, এবং সেই কারণে তাকে নানা ধরনের হুমকি ও শিকার হতে হয়েছে। তিনি বলেন, “প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক কাজ হারিয়েছি, অনেক হুমকির সম্মুখীন হয়েছি, তবে আমি কখনও থামিনি, কারণ এটাই আমার দায়িত্ব।” দেবলীনা আরও জানান, সামাজিক অধিকার এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি তাঁর দৃঢ় অবস্থান এখনো অটুট। এমনকি, তিনি বলেছিলেন, “আমরা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ না নেই, তবে সমাজের এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।”

আরও পড়ুনঃ ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের জন্য বাদ গেল কিডনি! কেমন আছেন অস্কার মনোনীত তরুণ বাংলা ছবির পরিচালক?

প্রতিবাদের এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে, দেবলীনা দত্ত এবং আরও বহু অভিনেত্রী-অভিনেত্রীদের যে কাজগুলি অব্যাহত রয়েছে, তা একটি বড় বার্তা দেয়। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে, সমাজের বিভিন্ন স্তরে সচেতনতা সৃষ্টি করা অত্যন্ত জরুরি। দেবলীনার মতো প্রতিবাদীদের সমর্থনে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসই সমাজে পরিবর্তন আনার প্রথম পদক্ষেপ হতে পারে। যেখানে একদিকে ন্যায়বিচারের দাবি, অন্যদিকে ভয়ের মধ্যে না থেকে তাদের সঠিক পথে অবিরাম চলার ইচ্ছা—এটাই আমাদের সঠিক পথ।