“আমি বলেছিলাম, এটা একেবারেই পছন্দ হয়নি!” “আমার বক্তব্যটাই বাদ দিয়েছে!”— ডান্স বাংলা ডান্সে দেবলীনার ‘চণ্ডালিকা’ বিতর্কে ক্ষোভ উগরে দিলেন মমতা শঙ্কর! রবীন্দ্র-নাটিকায় হিন্দি গানে ভাইরাল নাচ ঘিরে নির্মাতাদের কাঠগড়ায় তুললেন তিনি!

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী সৃষ্টি ‘চণ্ডালিকা’ যখন মঞ্চে পরিবেশিত হয়, তখন দর্শকের মন ছুঁয়ে যায় তার গভীরতা, বেদনা এবং সামাজিক বার্তা। কিন্তু সম্প্রতি ‘ডান্স বাংলা ডান্স’ (Dance Bangla Dance) -এর একটি পর্বে সেই ‘চণ্ডালিকা’র মোড়কে উপস্থাপিত একটি নৃত্য পরিবেশনা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়। ভাইরাল হওয়া একটি ক্লিপে দেখা যায়, এক খুদে প্রতিযোগীর সঙ্গে ‘দেবলীনা দত্ত’ (Debolina Dutta) পারফর্ম করছেন। তাঁদের পোশাক-আসাজে ছিল ‘চণ্ডালিকা’র ছোঁয়া, অথচ গান হিসেবে বেজে উঠেছে হিন্দি সিনেমার জনপ্রিয় সুর ‘তেরে বিনা জিন্দেগি সে কোই’! ব্যস, শুরু হয়ে যায় সমালোচনা।

এই বিশেষ পর্বে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট অভিনেত্রী তথা নৃত্যশিল্পী ‘মমতা শঙ্কর’ (Mamata Shankar)। অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, তিনি বুঝি এই বিতর্কিত উপস্থাপনায় সম্মতি দিয়েছেন, অথবা মঞ্চে থেকেও আপত্তি জানাননি। এর ফলেই সমাজ মাধ্যমে তাঁকে ঘিরে শুরু হয় কড়া সমালোচনা এবং কটাক্ষ। এবার সে বিষয়ে মুখ খুললেন খোদ মমতা। একটি ভিডিও বার্তায় তিনি পরিষ্কার জানালেন, বিচারকের আসনে বসার পক্ষপাতী কখনওই তিনি নন!

এবং সে দিনও ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বাইরে গিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন শুধুমাত্র শিল্পীসত্তার সামাজিক বন্ধনের জন্য। ভিডিওটিতে মমতা স্পষ্টভাবে বলেন, তিনি মঞ্চেই দাঁড়িয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন পরিবেশনার গানের পছন্দ নিয়ে। ‘চণ্ডালিকা’-র মতো একটি থিমে এমন বলিউডি গান তিনি একেবারেই মানতে পারেননি। এমনকি তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, সেদিন মঞ্চে উপস্থিত অন্য অনেকেও তাঁর সঙ্গে একমত হয়েছিলেন।

কিন্তু দুঃখের বিষয়, পুরো সম্পাদিত পর্বে তাঁর এই আপত্তির মুহূর্তটি সম্পূর্ণভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা দেখে দর্শকরা প্রকৃত সত্য জানতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবন ও বিশ্বাসের পরিপন্থী কোনও কিছু তিনি কখনও সমর্থন করেন না। ‘চণ্ডালিকা’ তাঁর কাছে শুধুমাত্র একটি নাট্যকলা নয়, আত্মপরিচয় ও প্রতিবাদের এক রূপক। তাই এমন একটি প্রেক্ষিতে ভুল বার্তা দেওয়া হলে, তাঁর চুপ করে থাকা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনঃ “ওঁরা কেউ আর কথা বলেন না!” “দায়িত্বটা নিয়েই চলেছি, অথচ সম্পর্কগুলো হারিয়ে গেছে!”— কালিকাপ্রসাদের পরিবার নিয়ে বি’স্ফো’রক মন্তব্য পৌষালী ব্যানার্জির!

তাঁর বক্তব্য, এই বিতর্কের জন্য শিশু প্রতিযোগীদের নয়, কোরিওগ্রাফার ও নির্মাতাদেরই জবাবদিহি করা উচিত। শেষে মমতা শঙ্কর অনুরোধ করেন, দর্শকরা যেন তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখেন। তিনি এমন কিছু করবেন না, যা তাঁর শিল্পীসত্তা এবং দর্শকদের ভালবাসার সঙ্গে বেমানান। “আমার উপর বিশ্বাস হারাবেন না”, এই বার্তাই যেন ছিল তাঁর শেষ কথায় স্পষ্ট। আর এই ঘটনা আবারও প্রশ্ন তোলে, শিল্পের নামে ‘ক্রিয়েটিভ লিবার্টি’-র সীমা কোথায়?

Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।