“ওঁরা কেউ আর কথা বলেন না!” “দায়িত্বটা নিয়েই চলেছি, অথচ সম্পর্কগুলো হারিয়ে গেছে!”— কালিকাপ্রসাদের পরিবার নিয়ে বি’স্ফো’রক মন্তব্য পৌষালী ব্যানার্জির!

জি বাংলার রিয়্যালিটি শো-এর হাত ধরে যাত্রা শুরু। রবীন্দ্রসঙ্গীত নিয়েই উচ্চশিক্ষা লাভ করেন তিনি, তবে এখনও নিজের শিকড়কেই আঁকড়ে ধরে রেখেছেন গায়িকা ‘পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায়’ (Pousali Banerjee)। লোকগানের (Folk Singer) মাটিতে দাঁড়িয়ে তৈরি করেছেন এক শক্ত ভিত। আজও শ্রোতাদের মুখে মুখে ঘোরে তাঁর গান। মঞ্চে উঠতেই একের পর এক গানের অনুরোধের ঢল নামে। তবে এত জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ভিতরে জমে আছে ক্ষোভ, জমে আছে অভিমান!

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেসবেরই খোলাখুলি জানিয়েছেন গায়িকা। এদিন পৌষালী অকপটে জানালেন, তাঁর এই যাত্রাপথ গড়ে উঠেছিল কিছু মানুষকে কেন্দ্র করেই। তাঁদের মধ্যে ‘কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য’ এবং ‘অভিজিৎ সেন’-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, এই দুই মানুষ তাঁর কাঁধে যে দায়িত্ব তুলে দিয়েছিলেন, সেটাকেই নিজের ধর্ম বলে মনে করেন তিনি। তাঁর মতে, লোকগানকে জাতীয় স্তরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে তাঁর কণ্ঠে।

তবে সেই জায়গায় দাঁড়িয়েও তিনি অনুভব করছেন এক প্রকার বঞ্চনা! জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও প্লেব্যাকের দুনিয়ায় জায়গা মেলে না কেন? এই প্রশ্নে গায়িকার উত্তর স্পষ্ট। তাঁর বক্তব্য, নির্মাতারা এখনও ভাবেন লোকগান মানেই অতিরিক্ত আবেগ, যা হয়তো সিনেমার দৃশ্যপটে মানাবে না। এই একরৈখিক ভাবনা থেকেই লোকগায়ক-গায়িকারা উপেক্ষিত থেকে যান। এমনকি সম্প্রতি এক ছবির জন্য প্রথমে তিনি গান রেকর্ড করলেও, সেটির জন্য পরে পুরুষ কণ্ঠশিল্পীকে বেছে নেওয়া হয়।

এমনকি পারিশ্রমিকটুকুও নাকি পাননি তিনি! গায়িকা বলেন, এই অভিজ্ঞতা নতুন নয়, কিন্তু তিনি হাল ছাড়ার পাত্রী নন। বাংলা গানে বারবার এক গলার পুনরাবৃত্তি নিয়েও মুখ খোলেন পৌষালী। তিনি বিশ্বাস করেন, শ্রোতারা বোকা নন। একই সুর, একই কণ্ঠ দিনের পর দিন শুনলে ক্লান্তি আসবেই। আর তাতেই নষ্ট হবে সেই শিল্পীর গ্রহণযোগ্যতা। তাঁর আশঙ্কা, এই পরিস্থিতি নতুনদের আগ্রহ কমিয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, দু’একটা গানকেই মানুষ ফোক গান ভাবে, যদিও এর বিস্তৃতি অনেক গভীরে।

আরও পড়ুনঃ গোপন চুক্তি আর প্রতিশোধের ছকে জড়িয়ে আকাশ ও কমলিকা! জিনিয়াকে মুক্ত করেই কি রায় পরিবারের সামনে বড় বিপদ!

পাশাপাশি, যাঁরা লোকগান করেন তাঁদের গলায় অন্যান্য ঘরানার গান মানায় না — এই ধরণের ধাঁচা বাধা ভাবনারও কড়া বিরোধিতা করেন গায়িকা। সবশেষে, নিজের জীবনের অন্যতম অনুপ্রেরণা কালিকাপ্রসাদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়েও একরাশ অভিমান লুকোন না তিনি। জানালেন,”ওরা কেউ আমার সঙ্গে কথা বলে না। কারণটা আমার অজানা, তবে প্রত্যাশা, সকলে নিজের মতো ভালো থাকুক।” যদিও তাঁর বিশ্বাস, লোকগান নিয়ে এই লড়াই একেবারে ক্ষুদ্র পরিসর থেকে শুরু হলেও, ধীরে ধীরে গন্তব্যের দিকে এগোচ্ছে।