‘মহাপ্রভু নিজেই চেয়েছেন, আমার কণ্ঠেই আবার ছড়িয়ে পড়ুক তাঁর বাণী…আমার মধ্যে দিয়েই আসুক শান্তির বার্তা’, ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’র মিউজিক লঞ্চে চোখের জলে, বিশ্বাস আর কৃতজ্ঞতায় ভাসলেন ‘নটী বিনোদিনী’ শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়!

গত সোমবার সৃজিত মুখার্জি এবং রানা সরকারের ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ (Lawho Gouranger Naam Re) ছবির মিউজিক লঞ্চ অনুষ্ঠানে, অতিথিদের উপস্থিতি ছিল নজরকাড়া। যদিও ছবির কিছু গায়ক, যেমন কবীর সুমন এবং অরিজিৎ সিংহ উপস্থিত থাকতে পারেননি। তবুও তাঁদের বার্তা পৌঁছিয়েছিল অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের কাছেই। গানে গানে ছবির সফলতা কামনাই করেছেন সবাই এদিন। কবীর সুমন তাঁর বার্তায় ছবির পরিচালক এবং সুরকারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, সঙ্গে ছবির সব সদস্যকেই অভিবাদন জানিয়েছেন। এদিন বিশেষত, শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের (Subhashree Ganguly) ‘নটী বিনোদিনী’র অভিনয়ের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হয়েছে।

গানের তালে যেমন নাচছিলেন দিব্যজ্যোতি, তেমনি শুভশ্রীও একেবারে মগ্ন হয়ে জয়তী এবং পদ্ম পলাশের গানের সুরে মেতে উঠেছিলেন। তারই সঙ্গে শুভশ্রীকে গলা মিলাতেও দেখা গিয়েছিল এদিন, চোখে জল নিয়ে। এর আগে ছবির প্রচারের সময় শুভশ্রী বলেছিলেন, ‘হিংসা দিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়, ভালবাসা দিয়েই জয় করা সম্ভব।’ এই বার্তা ছবির মধ্যেও প্রতিফলিত হয়েছে, যেখানে ভক্তিরস ও মানবতার জয়গান গাইতে দেখা যাবে। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন চরিত্র এবং তাঁদের সংগ্রাম এমন করে ফুটে উঠেছে যা দর্শকদের এক নতুন অভিজ্ঞতা দেবে।

এছাড়া, ছবির ট্রেলারটিও বিশেষভাবে নজর কেড়েছে সবার। চৈতন্যদেবকে নিয়ে এক ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি সামনে এসেছে, যেখানে ঐতিহাসিক উপাদান এবং লোককথার মিশ্রণে চিত্রিত হয়েছে তাঁর জীবন ও আধ্যাত্মিকতা। ছবির ট্রেলারে একদিকে যেমন গৌরাঙ্গের বাঁশি শোনা গেল, অন্যদিকে বিনোদিনীর চরিত্রের প্রশ্ন এবং নিত্যানন্দ গোসাইয়ের চরিত্রের গভীর ডায়লগ দর্শকদের এক অজানা রহস্যের দিকে আগ্রহ বাড়িয়ে তুলেছে। তবে, ছবিতে বিনোদিনীর সঙ্গে খানিকটা চৈতন্যকেও ছুঁয়েছেন শুভশ্রী।

এতদিন ছবির বিভিন্ন প্রচারে শুভশ্রীকে শাড়ি এবং সাবেকি সাজে দেখা গেলেও। সোমবার মিউজিক লঞ্চের দিন তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমী। এদিন তাঁকে খোলা চুল, জিন্স আর কালো জ্যাকেট পরে দেখা গেল। সব মিলিয়ে ছবি নিয়ে কতটা উৎসাহী এবং আধ্যাত্বিক কোনও অনুভূতি এখনও স্পর্শ করছে কিনা জিজ্ঞেস করা হয় তাঁকে। উল্লেখ্য, এদিন তিনি কবীর সুমনের বার্তায় কেঁদে দিয়েছিলেন আর সেই সূত্র ধরেই তিনি প্রথমে জানালেন, “এত বড় মানুষটার কাছ থেকে এমন প্রশংসা শোনাটাও ভাগ্যের ব্যাপার।

আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি, আমার নটী বিনোদিনী হয়ে ওঠা সফল হয়েছে এবার। আশা করছে ওনার কণ্ঠস্বরটাকে আগলে রাখি।” এরপর আধ্যাত্বিক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “শুধু আমি না, ছবিতে যারা যারাই আছে সবারই একটু হলেও এই অনুভূতিটা হয়েছে। আর আমি যেটা করি খুব সৎ ভাবেই করি, তাই এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই যে সবটাই ভগবানের ইচ্ছে। আজকে ২০২৫ এর শেষে দাঁড়িয়েই ভগবান হয়তো চেয়েছেন যে, আমাদের দিয়েই উনি বিশ্ব শান্তির বার্তা দেবেন।

আরও পড়ুনঃ প্রথম ভারতীয় ছবি হিসেবে পুরীর মন্দিরে শুটিং! ভগবানের সামনে শ্রীচৈতন্য হয়ে ওঠার জন্য আমিষ ছেড়েছিলেন দিব্যজ্যোতি! দিনে একবার সাত্ত্বিক আহার, কখনও উপোস! নিমাই হয়ে ওঠার রহস্য ভেদ করলেন অভিনেতা

নিজেই হয়তো চেয়েছেন আমার মধ্যে দিয়েই ওনার বানী আবার ছড়িয়ে পড়ুক। বড়পর্দায় মুক্তি পেলেই বাকিটা দর্শক নিজেরাই বুঝতে পারবেন, আধ্যাত্মিকতার জোর কতটা।” প্রায় পাঁচ শতাব্দী ইতিহাস নিয়ে নির্মিত এই ছবির গল্পের প্রেক্ষাপট একেবারে আধুনিক থেকে প্রাচীন পর্যন্ত বিস্তৃত এবং আর দু’দিন পর, আসন্ন ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনে মুক্তি পেতে চলেছে ছবিটি। এই মুহূর্তে সকল কলাকুশলীরা নিজেদের শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত। তবে পর্দায় তাঁদের চরিত্র কতটা বাস্তব ছুঁতে পারল, সেটা বলবেন দর্শকরাই।

You cannot copy content of this page