“গালি-গালাজটাই এখন যেন অভ্যাস! “এখনকার তরুণ অভিনেতা- অভিনেত্রীরা নিঃশ্বাস নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গালাগালি দেয়!”— নতুন প্রজন্মের মুখে নোংরা ভাষা নিয়ে বি’স্ফো’রক তনিমা সেন!”

টলিপাড়ায় যার আজ পর্যন্ত কোনো প্র’তিদ্বন্দ্বী নেই, বহুজনের আদরের পাত্রী তিনি। চেনা ও প্রিয় মুখ, তবুও একেবারেই ভিন্নধর্মী এক তারকা, অভিনেত্রী ‘তনিমা সেন’ (Tanima Sen)। এক ঝলকে দেখলে যাঁকে নিছকই কৌতুক অভিনেত্রী মনে হয়, কিন্তু একটু গভীরভাবে দেখলেই বোঝা যায়, তাঁর অভিনয়ের পরিধি ঠিক কতটা। চলচ্চিত্র থেকে ধারাবাহিক— দুই মাধ্যমেই দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি বহু বছর ধরে। বিশেষ করে, হাস্যরসের চরিত্রে যে সাবলীলতা, তা সত্যিই এই ইন্ডাস্ট্রিতে বিরল।

পুরুষ কমেডিয়ানদের ভিড়ে একজন মহিলা হয়ে জায়গা করে নেওয়া যেমন কঠিন, তেমনই সম্মান আদায় করাও মুখের কথা নয়, সেই কাজটাই নিঃসন্দেহে সাফল্যের সঙ্গে করেছেন তনিমা সেন। তাঁর অভিনয়ের একাধিক নমুনা আজও বাঙালি দর্শকের মনে রয়েগেছে। ‘জন্মভূমি’, ‘দেবী চৌধুরানী’, ‘শ্বশুরবাড়ি জিন্দাবাদ’ থেকে শুরু করে ‘সাঁঝের বাতি’ কিংবা ‘রামকৃষ্ণা’, এই সবগুলোতেই তাঁর চরিত্রে ছিল স্বতন্ত্রতা, প্রাণবন্তভাব যা দর্শক মনে গেঁথে গিয়েছে।

ছোট পর্দায় নতুন প্রজন্মের শিল্পীদের ভিড়েও তিনি নিজের আলাদা পরিচয় ধরে রাখতে পেরেছেন কেবল তাঁর অভিজ্ঞতা আর অভিনয়ের দাপটেই। আজ যখন অনেকেই বয়সের ভারে গুটিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের, তখনও তনিমা সেনের মতো অভিনেত্রীরা কাজ করে চলেছেন নিরন্তর, তবে শিল্পী হিসেবে তাঁর পর্যবেক্ষণও বেশ ধারালো। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বর্তমান প্রজন্মের তারকাদের নিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করেন তনিমা সেন।

তাঁর মতে, সময়ের সঙ্গে ভাষা বদলেছে, বদলেছে ব্যবহার। আগের প্রজন্ম যেখানে বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখত, এখনকার প্রজন্ম সেখানে অনেক বেশি নির্লজ্জ ও উদাসীন। বিশেষ করে ভাষার ব্যবহারে এসেছে বড় পরিবর্তন। এখন অনেক তরুণ-তরুণীর প্রবীণদের ক্ষেত্রেও খারাপ ভাষা ব্যবহার করতেও দ্বিধা বোধ করে না, বরং সেটা যেন একটা সাধারণ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।তনিমার মতে, এই প্রজন্মের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে মাঝে মাঝে মুখে তেঁতো হাসি রেখে চলতে হয়।

কারণ একদিকে কাজের প্রয়োজন, অন্যদিকে নিজেদের মর্যাদা রক্ষার দায়। যেখানেই সম্মানের অভাব, সেখান থেকে সরে আসাই ভালো, এটাই তাঁর ব্যক্তিগত ধারণা। এই অভিজ্ঞতা থেকে উঠে আসা বক্তব্য নিছক অভিযোগ নয়, বরং একটি প্রজন্মান্তরের দূরত্বের কথা। তবে তনিমা সেন এখনো আশাবাদী। কারণ তনিমার মতে, এখনো অনেক তরুণ অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন যারা প্রবীণদের শ্রদ্ধা করেন।

আরও পড়ুনঃ “নেতা নয় অভিনেতা হয়েই মানুষের সেবা করব!” “নেতা হতে গেলে যোগ্যতা লাগে!”— নাম না করে টলিউডের রাজনৈতিক ঝোঁক নিয়ে বি’স্ফো’রক বর্ষীয়ান অভিনেতা শুভাশিস মুখার্জি!

তারা ভালোবাসেন এবং প্রবীণদের থেকে শেখার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে চলেন। তাঁর বিশ্বাস, যতদিন কাজ করার ইচ্ছে থাকবে, ততদিন এই ইন্ডাস্ট্রির মাটি তিনি আঁকড়ে রাখবেন। আর দর্শকদের ভালবাসা তো আছেই পাশেই, সেই ভালবাসাই তনিমা সেনের মতো অভিনেত্রীদের বারবার প্রমাণ করে দেয়, যোগ্যতার কোনও বিকল্প হয় না। যোগ্যতা থাকলে সম্মান নিজের থেকেই আসে।