অভিনেত্রী ‘সম্পূর্ণা লাহিড়ী’র (Sampurna Lahiri) জীবনে নেমে এল এক গভীর শোকের ছায়া। চলতি মাসের শুরুতেই তিনি সমাজ মাধ্যমে এক দীর্ঘ পোস্টের মাধ্যমে বাবার অসুস্থতার খবর ভাগ করে নিয়েছিলেন অনুরাগীদের সঙ্গে। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা অর্থাৎ বিশিষ্ট অভিনেতা ও পরিচালক ‘নীলাদ্রি লাহিড়ী’ (Shri. Niladri Lahiri) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাঁর হার্টে দুটি স্টেন্ট বসানো হয়েছে এবং বাইপাস সার্জারির প্রস্তুতি চলছে। সকলকে বাবার জন্য প্রার্থনা করতে অনুরোধও করেছিলেন তিনি।
সম্পূর্ণা নিজে তখন বাবার চিকিৎসা ও হাসপাতালের নানা দায়িত্বে এতটাই ব্যস্ত ছিলেন যে ফোন কিংবা মেসেজে সাড়া দেওয়ার সময় পাচ্ছিলেন না। তবু এই কঠিন সময়ে যে অনেকে পাশে ছিলেন, তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন তিনি। তবে সকলের আশা ও প্রার্থনাকে ব্যর্থ করে দিয়ে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন নীলাদ্রি লাহিড়ী। হাসপাতালের বেডে আজ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন এই বর্ষীয়ান অভিনেতা-পরিচালক। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড।
বাংলা বিনোদন জগতে একাধিক স্মরণীয় কাজের জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন নীলাদ্রি লাহিড়ী। ‘তারে আমি চোখে দেখিনি’, ‘ব্যোমকেশ’, ‘রবি ঠাকুরের গল্প’, ‘মহানায়ক’, ‘নজর’ এবং ‘বাংলা মিডিয়াম’-এর মতো ধারাবাহিকে সম্পূর্ণার অভিনয় যেমন মন ছুঁয়েছে অসংখ্য দর্শকের। পাশাপাশি বাবা নীলাদ্রির পরিচালনায় ‘পরবাস’, ‘কাকাবাবু হেরে গেলেন?’ এই ছবিগুলিও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। একাধিক ওয়েব সিরিজেও ছিল তাঁর দক্ষ উপস্থিতি।
তাঁর হঠাৎ মৃত্যুতে সেই স্বর্ণালী কণ্ঠ আর অভিজ্ঞ অভিনয় হারাল বাংলা টেলিভিশন। এই কঠিন সময়ে বাবাকে হারিয়ে সম্পূর্ণা লাহিড়ী চরম শোকের মধ্যে রয়েছেন। পরিবার-পরিজন ও অনুরাগীরা পাশে রয়েছেন তাঁর। কিন্তু এই ক্ষতি পূরণ করার মতো নয়। নিঃসন্দেহে, এটি শুধুমাত্র একজন কন্যার বাবাকে হারানোর যন্ত্রণা নয়, বরং টলিউডও হারাল এক উজ্জ্বল প্রতিভাকে। শিল্পী বিদায় নিলেও তাঁর কাজ বাংলা দর্শকের হৃদয়ে চিরকাল অমলিন হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুনঃ “গ’রুর মাংসের রেসিপির দাম ছিল ১৭ বছরের কেরিয়ার!” “আমার অস্তিত্ব মুছে ফেলতে চেয়েছিল, মে’রে মুখ ফাটিয়ে দেবো বলেছিলাম!”— অকপট সুদীপা! জি বাংলাকে সরাসরি কাঠগড়ায় তুললেন তিনি! প্রতিযোগী নয়, আপনজনই করেছিলেন শ’ত্রুতা! সুদীপার কেরিয়ারে ছু’রি চালাল কে?
আজ বাংলা বিনোদন জগতের আকাশে আরেকটি তারা নিভে গেল। কিন্তু তাঁর সৃষ্টির আলো চিরকাল পথ দেখাবে নবীন শিল্পীদের। এই মৃত্যুতে শেষ হল একটি অধ্যায়, শুরু হল এক অনন্ত শ্রদ্ধার পর্ব। তাঁর চলে যাওয়া শুধুই একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং এক প্রজন্মের আবেগের অবসান। অনেক চরিত্রে অভিনয় করলেও, জীবনের শেষ অধ্যায়ে তিনি নিজেই হয়ে উঠলেন এক বাস্তবের নায়ক। আমরা আজ তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে মাথা নত করছি—এক কিংবদন্তি হারিয়ে যাওয়ার বেদনায়।