বাংলাদেশের (Bangladesh) ময়মনসিংহে অবস্থিত কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার ‘সত্যজিৎ রায়’ (Satyajit Ray) -এর পৈতৃক ভিটে ভাঙার ঘটনায় নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাংলার ইতিহাসপ্রেমী মহলে চরম উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ঢাকার হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত এই বাড়িটি এক সময়ে উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর বসতভিটে ছিল, যা পরবর্তীতে সত্যজিৎ রায়ের পারিবারিক আবাস হয়ে ওঠে। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।
বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় এক শতাব্দী প্রাচীন এই ভবনটি দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল। বর্তমানে সেটিকে ভেঙে সেখানে একটি শিশু অ্যাকাডেমি নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিশুদের নিরাপত্তার কারণে এবং দীর্ঘদিন ব্যবহৃত না হওয়ায় ভবনটি ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও ঐতিহাসিক মূল্য বিবেচনায় এই সিদ্ধান্তে যথেষ্ট বিতর্কের অবকাশ রয়েছে।
এর আগে, সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছারি বাড়িতে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ভারত সরব হয়েছিল। এবার সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি বিজড়িত ভবনের ধ্বংস নিয়ে আরও একবার ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষায় প্রশ্ন উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পোস্টে বলেন, ‘রায় পরিবার শুধুমাত্র একটি পরিবারের নাম নয়, বরং তারা বাংলা ভাষা, সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক। তাই এই বাড়ির গুরুত্ব শুধুমাত্র বাংলাদেশের জন্য নয়, সমগ্র উপমহাদেশের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের জন্যই অপরিসীম।’
এই খবর সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তড়িঘড়ি হস্তক্ষেপ করেন। তিনি দাবি করেন, বাংলার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা এই বাড়িটি কোনওভাবেই ধ্বংস করা উচিত নয়। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই), তিনি বাংলাদেশের সরকারের কাছে এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য সংরক্ষণের আবেদন জানান এবং কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকেও অবিলম্বে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেন।
আরও পড়ুনঃ শেষ মুহূর্তে বাজিমাত! স্বতন্ত্রর এন্ট্রিতে বর্ষা-চন্দ্রের প্ল্যান চুরমার! গ্রেপ্তারের মুখ থেকে কমলিনীকে বাঁচাল স্বতন্ত্র! কমলিনীর বিপক্ষে পুরো পরিবার, পাশে দাঁড়াল একমাত্র মাসি! এবার কি ধরা পড়বে বর্ষা-চন্দ্র?
এই প্রসঙ্গে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকও একটি বিবৃতি প্রকাশ করে জানিয়েছে, ভবনটি ভেঙে ফেলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করাই বাঞ্ছনীয় হবে। একইসঙ্গে তারা জানিয়েছে, সত্যজিৎ রায়ের মতো একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পীর স্মৃতিসংশ্লিষ্ট এই ভবনের রক্ষণাবেক্ষণে ভারত সরকার প্রয়োজনে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। দুই দেশের সংস্কৃতির মিলনস্থল এই বাড়িটি যদি পুনর্গঠনের মাধ্যমে সংরক্ষিত হয়, তাহলে তা এক ঐতিহাসিক বন্ধনের নিদর্শন হবে ভবিষ্যতের প্রজন্মের কাছে।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।