এই মাস কয়েক আগের কথা, ডান্স বাংলা ডান্সের মঞ্চে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’কে (Chitrangada) নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল। অভিযোগ উঠেছিল, এই নৃত্যনাট্যের মাধ্যমে কবিগুরু যে বার্তা দিয়েছিলেন বা এর মধ্যে যে অন্তর্নিহিত অর্থ আছে, সেটাকেই বিকৃতকরণ করা হয়েছে। তার থেকে বেশি অপমানের, হিন্দি ছবির গান ব্যাবহার করা হয়েছিল। বাংলার সাংস্কৃতিক মহল ক্ষোভে উত্তাল হয়েছিলেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে।
এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই আবার বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এলো কবিগুরুর সেই নৃত্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’! এবার অবশ্য কোনও বাংলা মাধ্যম নয়, বরং এক হিন্দি চ্যানেল পড়েছে বাঙালির রোষের মুখে। কিন্তু ঘটনাটা ঠিক কী? হিন্দি টেলিভিশনের অন্যতম জনপ্রিয় চ্যানেল হচ্ছে ‘কালার্স টিভি’ (Colors TV)। মূল ধারাবাহিকের বাইরে, এই চ্যানেল বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ের জন্য। বর্তমানে, ‘পতি পত্নী অউর পাঙ্গা’ নামের একটি শো বেশ নজর কেড়েছে।
শনি এবং রবিবার সম্প্রচারিত এই বিনোদন মূলক অনুষ্ঠানে, তারকা দম্পতিরা নিজেদের সম্পর্কের দৃঢ়তা এবং মজাদার দিকগুলি তুলে ধরেন। সম্প্রতি এমনই এক পর্বের ছোট্ট মুহূর্ত সমাজ মাধ্যমে সমালোচনা মুখে পড়েছে। সেখানে বঙ্গকন্যা দেবীনা ব্যানার্জীকে দেখা গেছে, স্বামী গুরমীত চৌধুরীর সঙ্গে ‘চিত্রাঙ্গদা’র প্রথম ভাগ, অর্থাৎ প্রথম দৃশ্যে চিত্রাঙ্গদার শিকার আয়োজনের অন্তর্ভুক্ত এই গানের ছন্দে রচিত প্রাকৃতিক বর্ণনাকে কৌতুকভাবে উপস্থাপনা করতে।
দেখা গেল, “গুরু গুরু গুরু গুরু ঘন মেঘ গরজে পর্বতশিখরে, অরণ্যে তমশ্ছায়া…” লাইনগুলো শুনে উপস্থিত সকল প্রতিযোগী থেকে শুরু করে, উপস্থিত সকল বিচারক যেমন নেহা কক্কর পর্যন্ত হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছেন! আবার এই ক্লিপটি চ্যানেলের তরফে শেয়ার করে, ক্যাপশনে লেখা— “এই গানটিকে অফিসিয়ালি বৌদের অ্যানথেম বানানো হোক!” সমাজ মাধ্যমে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়েছে এটি, বাঙালিদের চোখে পড়তেই শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক!
আরও পড়ুনঃ “পচা নাড়িভুঁড়ি খেতে দেয় ৪০টা বাচ্চাকে…কালকে আমার নরক দর্শন হয়েছে! “হয়তো আগের জন্মের কোনও কৃতকর্মের ফল পেলাম এটা!”— বিস্ফো’রক সব তথ্য ফাঁস করলেন সুদীপা! প্রশ্ন তুললেন প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে! ক্রেশের অমানবিক আচরণের বিবরণে কাঁপল নেটপাড়া!
কেউ চ্যানেলকে তুলোধোনা করেছেন, “বৌদের অ্যানথেম? আগে একটু পড়াশোনা করে এসব বলবেন! কবিগুরুর অপমান আমরা মানবো না এরপর!” আবার কেউ বলেছেন, “রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চেনেন? যার লেখা গান জাতীয় সংগীত হিসেবে গান! লজ্জা করে না তাঁর সৃষ্টি নিয়ে ভেঙ্গাতে? ছি, এনারা নাকি সেলিব্রেটি!” একজনের কথায়, “দোষ তো ওদের চেয়েও বেশী দেবীনার! এমন কৌতুক ভাবে কবিগুরুকে প্রিটেন্ড করলো যে, সেটা দেখে যে কেউ হাসবে৷ কোনও সম্মানবোধ নেই অপদার্থ বাঙালি!” অন্যজনের কথায়, “দাঁত বের করলেই কুল হওয়া যায় না। যার রচনা নিয়ে এত হাসাহাসি সেই মহামানবের নখের যোগ্য হতে আপনাদের মত অসভ্য মানুষের শতজন্ম পেরিয়ে যাবে।”